স্বদেশ ডেস্ক:
লিবিয়া থেকে সিরিয়া যাচ্ছিল নৌকাটি। মাঝে গ্রিসের সমুদ্রে নৌকাটিতে যান্ত্রিক গোলযোগ হয়। নৌকাটি ডুবে যেতে শুরু করে। বুধবার (১৪ জুন) এই ঘটনা ঘটে। বুধবার থেকেই গ্রিসের কোস্টগার্ড সমস্ত রকম যন্ত্রপাতি নিয়ে নৌকায় থাকা ব্যক্তিদের উদ্ধারকাজে নামে।
কোস্টগার্ড জানিয়েছে, এখনো পর্যন্ত ১০৪ জনকে উদ্ধার করা গেছে। দেহ উদ্ধার হয়েছে ৭৯টি। কিন্তু তাদের আশঙ্কা, ওই নৌকায় প্রায় সাড়ে সাতশ যাত্রী ছিলেন। তাদের মধ্যে নারী, গর্ভবতী নারী এবং শিশুরা ছিল। তাদের কারো খোঁজ এখনো মেলেনি। অধিকাংশ যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবারও দিনভর উদ্ধারকাজ চলেছে। কিন্তু সকলকে এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। নৌকাটির কিছু অংশ মিলেছে গভীর সমুদ্র থেকে।
গ্রিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নৌকাটিতে মূলত সিরিয়া, মিশর এবং পাকিস্তানের শরণার্থীরা ছিলেন। যারা লিবিয়া হয়ে ইউরোপে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন। যারা উদ্ধার হয়েছেন, তাদের সকলেকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা একটি উগ্রবাদিগোষ্ঠী তৈরি করতে যাচ্ছিলেন, এমন ইঙ্গিতও মিলেছে।
তবে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিরা মানসিকভাবে সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তাদের প্রিয়জনেরা এখনো নিখোঁজ। অনেকেই গোটা পরিবার নিয়ে যাত্রা করছিলেন। তবে গ্রিস কর্তৃপক্ষকে তারা নিজেদের যাত্রাপথের কথা বলেছে।
গ্রিসের কোস্টগার্ডের দাবি, মঙ্গলবারই তারা ওই নৌকাটিকে দেখতে পেয়েছিল। তারা সাহায্য করতে এগিয়েও গিয়েছিল। কিন্তু নৌকাটি পালিয়ে যায়। সাহায্য নিতে অস্বীকার করে। সাহায্য নিলে আজ এই বিপর্যয় হতো না। মূলত, বুধবার নৌকাটি ডুবে যায়।
গ্রিসের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বামপন্থি নেতা অবশ্য জানিয়েছেন, তিনি নিজে ওই শরণার্থীদের সাথে কথা বলেছেন। তারা জানিয়েছেন, বুধবার তারা সাহায্য চেয়েছিলেন, কিন্তু ঠিক সময়ে তা পাননি।
জানা গেছে, নৌকার নিচের খোলে গর্ভবতী নারী এবং শিশুরা ছিলেন। প্রাণ বাঁচানোর সামান্য সুযোগটুকুও তারা পাননি।
ঘটনার জেরে গ্রিসে একদিনের শোকদিবস ঘোষণা হয়েছে। পোপ এই ঘটনার জন্য বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করেছেন।
সূত্র : ডয়চে ভেলে